চরম হাসির গল্প আশ্বাস | প্রচন্ড হাসির ছোট গল্প


শিক্ষনীয় হাসির গল্প


সে অনেকদিন আগের কথা। আমি এক পাতি নেতাকে চিনতাম। বিপুল ভোটে ‘ফেল’ করে তিনি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ভরাডুবি যাকে বলে আরকি।

তো এই ভরাডুবির কিছুদিন পর তার সঙ্গে মোড়ের চা-স্টলে দেখা। আমি তাকে হালকা ধোয়ার পর বললাম, দেখেন, পাবলিকের কাছ থেকে শুধু নিলে চলে না। পাবলিককে কিছু দিতেও হয়। যারা দেয় না, দিতে জানে না, তাদের তো এমন পরিণতি হবেই।


আমার কথায় তিনি খানিকটা চটে গেলেন। বললেন, কে বলেছে আমি পাবলিককে কিছুই দিই নাই? অবশ্যই দিয়েছি। আমি এক নাগারে আশ্বাস দিয়েছি, ভুলে গেছেন? বিশ্বাস না হলে খোঁজ নিয়ে দেখেন। 

কথা সত্য। আমার আর খোঁজার দরকার হয়নি। পিয়াজের দামের কথা ধরা যাক। যখন পিয়াজের কেজি ১০০ টাকার কাছাকাছি চলে গেল, তখন থেকে এই আশ্বাস শুনে আসছি, দাম কমবে, কমবে। আর এখন ২৫০ টাকার আশপাশে দাম। দাম নাকি কমবে, কমবে বলে এখনো আশ্বাস দিচ্ছে।

অনেকটা সেই লোকের মতো। যে কিনা সবসময় বলে তার বয়স পঞ্চাশ। তো তাকে এক লোক জিজ্ঞাসা করল, আপনি দশ বছর আগেও বলেছিলেন আপনার বয়স পঞ্চাশ, এখনো বলছেন পঞ্চাশ। ব্যাপারটা কী বলেন তো?


লোকটা বলল, আমি একজন ভদ্রলোক। আর ভদ্রলোকের এককথা। ঘটনা যদি তাই হয়, মানে সত্যিই যদি ভদ্রলোকের এককথা হয়, তাহলে চোখ বন্ধ করে এই কথা বলা যায়, আমাদের চারপাশে ভদ্রলোকের কোনো অভাব নেই। বিস্তর ভদ্রলোক।

কিন্তু আজব হলেও সত্য, আজকাল ‘দাম কমবে’ কথাটা আমাদের কানে ঢুকছে ‘না’ যুক্ত হয়ে। মানে ‘দাম কমবে না’।

আমার এক বড়ভাই বললেন, জীবনে একপর্যায়ে পৌঁছতে হবে যেন কাজ না করলেও হয়। কেবল ফাঁকা বুলি আর আশ্বাস দিয়েই কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়।

তবে সেই পর্যায়ে না পৌঁছানোয় বেশ চিপার মধ্যে পড়েছি। আমার আশ্বাস কেউ বিশ্বাস করছে না। কেউ বলতে আমার বউ, শ্যালক, শ্যালিকা এরা আরকি।

আমি বললাম, আপনি তাদের কী আশ্বাস দেন বা দিতে চান, একটু জানতে পারি? বড়ভাই বললেন, একটাই আশ্বাস দিই। পরের মাস থেকে আমার ইনকাম বাড়বে।


আমি বললাম, এই আশ্বাস দিয়ে আর লাভ নেই। কারণ, ইনকাম বাড়লেও আজকাল কোনো ফায়দা হয় না। ইনকাম বাড়লে তো আর দ্বিগুণ বাড়বে না, তাই না? কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম শুধু দ্বিগুণ কেন, দশগুণও বেড়ে যেতে পারে।

তাহলে ইনকাম বেড়ে লাভটা কী? বরং ইনকাম বাড়ার আশ্বাস না দিয়ে অন্যদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে এই আশ্বাস দেন, দাম কমবে, ধৈর্য অ্যান্ড ধৈর্য।

আমার এক ছোটভাই বলল, আমি যে বাসায় থাকি, সেখানে গ্যাস লাইন নেই। খুব কষ্টে রান্নাবান্না হচ্ছে। যে কারণে করতে হয় কী, প্রায়ই দেরিতে খেতে হয়। কোনো কোনো সময় তো ভাতের বদলে চিড়া-মুড়ি দিয়ে চালিয়ে দিতে হয়।


অথচ বাড়িওয়ালা বহুদিন ধরে আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছে, গ্যাস নাকি আসবে। তার আশ্বাসে বিশ্বাস করতে করতে নিজেই এখন গ্যাসের গোডাউন হয়ে গেছি।

আমি বললাম, গ্যাসের গোডাউন হয়ে গেছিস মানে? ঠিক বুঝলাম না।

ছোটভাই বলল, না মানে, গ্যাসের অভাবে সময়মতো রান্নাবান্না না হওয়ার কারণে সময়মতো খাওয়াও হয় না। আর সময়মতো না খেলে বা বাসি চিড়া-মুড়ি খেলে পেটে গ্যাস হয় জানেনই তো। আর কি ভেঙে বলার দরকার আছে?

আমি বললাম, না ভাঙাভাঙির দরকার নাই।

অবশ্য আমার এক বড়ভাই তাদের পুরোপুরি ভেঙে গেছেন। কারণ তার প্রাণপ্রিয় প্রেমিকা আরেক যুবকের হাত ধরে পালিয়ে গেছে। প্রেমিকা পালিয়ে যাওয়ার পর তিনি পাগলপ্রায়।


আমি বললাম, যে গেছে তাকে যেতে দিন। মানুষের মন খাঁচায় আটকে রাখা যায় না। বড়ভাই ধমক দিয়ে বললেন, বেশি পেকে গেছিস! আমি কি আর প্রেমিকার মনের জন্য পাগলপ্রায়?

এই ছলনাময়ীকে বিশ্বাস করে ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, পিন নাম্বারসহ দিয়েছিলাম। যখনই টাকা তুলছে মোবাইলে একটা করে মেসেজ আসছে। সেটা দেখেই বারোটা বাজছে আমার।

এই করুণ অবস্থায় বড়ভাইকে আশ্বাস দিয়ে বললাম, ভাই যে গেছে তাকে ক্রেডিট কার্ডসহই যেতে দিন দেইখেন, টাকা ফুরালে প্রেমিকা ফেরত আসবে। আপনার আরেকটা ক্রেডিট কার্ড আছে তো?

এরকম আরো শিক্ষনীয় হাসির গল্প ও বাস্তব হাসির গল্প পড়তে স্টোরি বাংলার ছোট হাসির গল্প ক্যাটাগরি ব্রাউজ করুন।


Check Also

শিক্ষনীয় হাসির গল্প দুলাইভাইর ইউটিউবিং | কমেডি হাসির গল্প

দুলাভাই রসিক মানুষ। সংসারি নয়। আমার মতে তিনি অ্যাকসিডেন্টাল বিয়ের শিকার। যখন যেটা মাথায় আসে, একচোট এক্সপেরিমেন্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *