ফ্রিল্যান্সারদের জীবন নিয়ে বাংলা গল্প পার্ট ২

প্রথম পার্ট পড়ুন: একজন ফ্রিল্যান্সারের জীবনী পার্ট ১

ছোটদের বাংলা গল্প

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম তার ইন্টারভিউ নিল। তার মা- বাবা তাদের ভুল আগেই বুঝতে পেরেছিল । এত সফল হওয়ার পর তার কিছু বিষয়ের জন্য খারাপ লাগে।

তার ফ্রিল্যান্সিংয়ের বাংলা গল্প পত্রিকায় ছাপানোর পর, তাদের কিছু আত্মীয় তার কাছে টাকা চাইত। তারা ভাবতো তার কাছে নাকি প্রচুর টাকা। টাকা না দিলে তারা মাসুদের বদনাম করতে।

তাকে তারা খোঁটা দিত। তারা পিছে পিছে বলত যে- টাকা পাওয়ায় মাসুদের পা আর মাটিতে পরে না।
তার কিছু বন্ধুরাও তার সাথের এমন খারাপ ব্যবহার করত।

তবে তার বেষ্ট ফ্রেন্ড সবসময় তার পাশে থেকেছিল। এসব বিষয় ভেবে তার খারাপ লাগলেও, সে তার মতো ফ্রিল্যান্সিং চালিয়ে গেল।

তার সাফল্য দেখে অনেকেই তার কাছে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চাইল। সে তাদের ফ্রিল্যাসিং ভালোমতো বুঝিয়ে দিল। অন্যকে শিক্ষা দানের মাধ্যমে সে অনেক আনন্দ পেল।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে এলাকায় তাদের  আর্থিক অবস্থা সচ্ছল হলো।
ফ্রিল্যান্সিং জীবনে তার অনেক পাওয়া আছে। কিছু কিছু সুখ স্মৃতি তার আজীবন মনে থাকবে।

একবার ঈদের রাত্রিতে তার এক অর্ডার আসল। সে ঈদের জন্য না করে দিল।

সে ক্লায়েন্টকে বলল- কালকে আমাদের ঈদ। তাই অর্ডার কমপ্লিট করতে পারব না।

ক্লায়েন্ট তার কাছে অনেক অনুরোধ করল কাজটি করার জন্য।

মাসুদ চেয়েছিল ঈদের এই কয়েকটা দিন পরিবারের সাথে সময় কাটাতে। এজন্য সে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল। কিন্তু ক্লায়েন্টের অনুরোধে সে কাজটি করে।

সে তার সাথে তার ল্যাপটপটা নিয়ে গিয়েছিল। সে ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা দিয়ে ম্যাকবুক কিনেছিল। গ্রামে সে তার কাজিনদের নিয়ে ল্যাপটপ দেখতেছিল। এমন সময় অর্ডারটি এসেছিল।

সে কাজটি করে দিল। অর্ডারটি কমপ্লিট করতে বেশী সময় লাগল না। তার কাজও ক্লায়েন্টের খুব পছন্দ হয়েছিল।

কিন্তু সে ক্লায়েন্টের পেমেন্ট দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল। মাসুদ প্রথমে বুঝে উঠতে পারেনি। সে তার সাথে যোগাযোগ করে ।

তখন ক্লায়েন্ট বলে, সে তাকে ঈদের উপহারস্বরূপ বেশি পেমেন্ট করেছে। এতে মাসুদের মনটা খুশিতে ভরে যায়।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের এসব স্মৃতি হয়তো মাসুদ আজীবন মনে রাখবে। এই সেক্টরে তার যেমন কিছু ভালো স্মৃতি আছে, তেমনি কিছু খারাপ স্মৃতিও আছে। তো শুধু ভালো স্মৃতিগুলোই মনে রাখে। খারাপ স্মৃতিগুলো সে যথা সম্ভব ভুলে যেতে চেষ্টা করে।

এভাবে ফ্রিল্যান্সিং করতে করতে ২ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। তার এই পেশা সকলে মেনে নিয়েছে। সে এখন পুরোদমে ফ্রিল্যান্সিং করে। সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সে এলাকায় একটা শুনামও অর্জন করেছে।

একটা ফ্রিল্যান্সিং জীবনের ঘটনা ঘটে তার এখনো মনে পরে। যখন স্কুল -কলেজ খুলল, তখন কিছুদিন পর তার পরীক্ষাও শুরু হল।

তার অনেক সহপাঠী তাকে বড়লোক বলে খোটা দিত। কিছু সহপাঠী তার সুসময়ের বন্ধু হতো চেয়েছিল। তার এক বন্ধু তো তার কাছ থেকে প্রায়ই টাকা চাইত।

সে তার বন্ধু হিসেবে তাকে টাকা দিত। মাসুদ তার উদ্দেশ্যে একদিন বুঝতে পেরেছিল। তার সেই বন্ধু তার কাছ থেকে নেওয়া টাকা শুধু শুধু খরচ করত।

মাসুদ আগে ভাবত সে হয়তো কোনো প্রয়োজনে তার কাছ থেকে টাকা নিত। সে টাকার অপচয় পছন্দ করে না।

মাসুদ নিজের টাকা কোনোদিন অপচয় করেনি। সে নিজে আয় করে বলেই হয়তো সে টাকা অপচয় করে না।

তখন সে তার ঐ বন্ধুর সঙ্গ ত্যাগ করেছিল। এমন নয় যে তার সব বন্ধুই খারাপ ছিল । তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু সবসময় তার পাশেই ছিল। সে সবসময় তাকে কাজ করার উৎসাহ দিত।

এখন সে আর নিজের এলাকায় প্রতিষ্ঠিত। তবুও সমাজে তো কিছু খারাপ মানুষ থাকেই। যারা শুধু অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ায়। তারা মাসুদের নিন্দা করে।

প্রথম প্রথম এভাবে তার মন খারাপ করলেও, আস্তে আস্তে সে এসব নিন্দায় অভ্যস্ত হয়ে যায়।

কিছু ফ্রিল্যান্সার যাদের মাসুদ প্রশিক্ষন দিয়েছিল, তারা এখন মাসুদের সাথে কাজ করে। এতে করে মাসুদের কাজ আরও সহজ হয়ে গেল।

একবার তার টিমের সকল মেম্বারদের ইন্টারভিউ টিভি চ্যানেলে নেওয়া হয়েছিল। তখন তার সম্পর্কে আরো মানুষ জানতে পারে।

এভাবেই চলতে থাকে মাসুদের ফ্রিল্যান্সিং। এই ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমেই সে তার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পেরেছে।

Check Also

ছোটদের গল্প রূপকথার গল্প | সাহসী বালক পার্ট ৩

প্রথম পার্ট: ছোটদের রূপকথার গল্প সাহসী বালক দ্বিতীয় পার্ট: ছোটদের কাল্পনিক গল্প সাহসী বালক পার্ট ২ তার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *