২ বন্ধুর জীবনের গল্প | বন্ধুত্বের কষ্টের বাংলা গল্প

bangla golpo




এক গ্রাম ছিল খুব ভালো দুই বন্ধু ছিল। একজনের নাম আলি আরেক জনের নাম ফিহাদ। তারা উভয়ই সমবয়সী। তাদের সব কিছতেই পছন্দ একরকম। তারা দুজনেই শিক্ষনীয় গল্প পড়তে ভালোবাসে। দুজন স্থানীয় এক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ে।

তারা দুজন একদিন স্কুল পালিয়ে শহরে গেল। তাদের কাছে মোট ১০০ টাকা আছো। চারপাশে সারি সারি দোকান। তারা দুজন একটি মিষ্টির দোকানে ঢুকল। তারপর মিষ্টি খেয়ে বের হল দোকান থেকে। তারা একটি পার্কে গিয়ে অনেক মজা করল। 


ফেরার পথে তারা দেখল তাদের কাছে মাত্র দুই টাকা আছে। তারা দুই টাকা দিয়ে দুইটি চকলেট কিনে। বাড়ি যাওয়ার সময় তারা দেখে তাদের কাছে এক টাকাও নেই। তারপর তারা হাঁটতে লাগল। হাঁটতে হাঁটতে তারা এক জঙ্গলে গিয়ে পৌঁছে। তারা এখন জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলেছে।

অনেক রাত হয়ে গেছে।  তারা একটি বড় গাছের নিচে আশ্রয় নিল। ফিহাদের খুব ভয় করছে। তাদের দুজনের খুব  খিদে পেয়েছে। তারপর তারা দুজন চকলেট দুটো খেয়ে ঘুমিয়ে পরল। তারা দুজন সকালে উঠে দেখে, তারা দুজন যে গাছের নিচে আশ্রয় নেয় সে গাছের উপরে একটি সাপ ঘুমিয়ে আছে। তারা তা দেখে ভয় পেয়ে গেলো।

তারা আবার হাঁটতে লাগল। কিছুদুর হাঁটার পর তারা দেখে, একজন মৌয়াল একটি কাঁঠাল গাছের মৌচাক থেকে মধু নিচ্ছে। তারপর তারা দুজন ঐ মৌয়ালের পিছে হাঁটতে লাগল। ঐ মৌয়ালের পিছু হাঁটতে হাঁটতে তারা জঙ্গলে পেরিয়ে গ্রামে পৌছে গেল।

তাদের দুজনেরই খুব খিদে পেয়েছে। তারা একটি বাড়িতে ঢুকল। সে বাড়ির কর্তার কোনো সন্তান নেই। সে বাড়ির কর্তার তাদের দুজনকে খুব ভালো লেগে গেল। তাদের দুজনকে তিনি তার বাড়িতে রেখে আশ্রয় দিলেন।


তাদের দুজনের মা-বাবা অনেক খুঁজার পরও তাদের দুজনকে খুঁজে পেল না।

এমন করে দশ করে বছর কেটে গেল। আলির বিয়ে ঠিক হয়েছে। পাশের গ্রামের এক মেয়ের সাথে।

আলি এবং ফিহাদ একটি সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পেল। আলি এবং ফিহাদ দুজনে মিলে একটি দু তলা বাড়ি তৈরি করার পরিকল্পনা করল। তারা দুজন ব্যাংক থেকে কিছু টাকা লোন নিল ।


তারা দুইজন ফিহাদের এক বন্ধুর কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিল। ফিাহাদের সে বন্ধু ব্যাংকে চাকরি করে। কিছুদিনের মধ্যেই তাদের দুতলা ঘর বানিয়ে ফেলল রাজমিস্ত্রিরা। বাড়ী তৈরীর পর আলির বিয়েও সম্পন্ন হয়ে গেল।

ফিহাদের বন্ধুকে আলি তার ধারকৃত টাকা দিতে পারলনা। ফিহাদ তার বন্ধুর টাকা দিয়েছে। ফিহাদের বন্ধু ও আলির সাথে অনেক শত্রুতা তৈরি হলো। এভাবে পাঁচ বছর কেটে গেল।

ফিহাদের বিয়ে ঠিক হলো। ফিহাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেল। বিয়ের কয়েকদিন পরে আলিকে ফিহাদের বন্ধু শত্রুতায় মেরে ফেলল। ফিহাদ তার বন্ধুর মৃত্যুর সম্পর্কে পুলিশকে খুলে বলে।

সে একদিন রাত লুকিয়ে লুকিয়ে তার বন্ধুর বাড়ি গিয়ে তাকে শেষ করে আলির বদলা নেয়। কারন ফিহাদ তার নিজের বন্ধুকে সন্ধেহ করেছিল। ফিহাদের সেই বন্ধুর নাম সিফাজ।

পুলি তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। তদন্তে পুলিশ ফিহাদকে থানায় নিয়ে গেল। ফিহাদকে দু তিনটি লাঠির পিটা দেওয়ার পর ফিহাদ বলল, এর জন্য আমি দায়ী। পুলিশ কারণ জিজ্ঞেস করল।


ফিহাদ বলল- আমি এবং আলি একটি বাড়ি তৈরি করার পরিকল্পনা করলাম। সে বাড়িটি ছিল দু তলা। দুতলা আমার ও একতলা আলির। আলি আমার ছোট বেলা থেকেই খুব ভালো বন্ধু ছিল। আমরা দুজন ব্যাংক থেকে কিছু টাকা লোন নিলাম।

আবার আমার আরেক জন বন্ধু সিফাজের থেকে আমরা দুজনে কিছু টাকা লোন নেই। আমি ধারকৃত টাকা সিফাজকে সময়মতো পরিশোধ করি। কিন্তু আলি গরীব হওয়ার কারনে সিফাজকে সময়মতো টাকা দেয় নি। এজন্য কয়েকবছর পর সিফাজ এমনটা করল। আর আলির মৃত্যুর শোকে আমি এমনটা করেছি।

পুলিশ বলল- এজন্য তুমি ওর সাথে এমনটা করেছো। আগামীকাল তোমাকে আদালতে যেতে হবে। ফিহাদকে কারাদন্ড দেওয়া হল। যেহেতু ফিহাদ তার অপরাধ শিকার করেছিল এবং তার আগের কোনো অপরাধ নেই, তাই তাকে কম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছিল।

জেলখানায় তার সাথে এক কয়েদির বন্ধুত্ব হয়েছিল। কয়েদিকে অনেক বছরের জন্য কারাদন্ড দেওয়া হয়েছিল। তাই কয়েদি ফিহাদকে গুপ্তধনের কথা বলল।


কয়েদি বলল- তুমি কি গুপ্ত ধন কোথায় আছে জানতে চাও?

ফিহাদ জানতে চাই বলল।

সে তখন ফিহাদকে গুপ্তধনের কথা বলল। সিলেটে বাংলাদেশ ও ভারত সিমান্তের কাছে সুরমা নদীর তীরের পশ্চিম-উত্তরে একটি পুরাতন বাড়ি আছে। সেই বাড়ী বহুকাল ধরে পরিত্যাক্ত। সেই বাড়ির বাগানের ঠিক মাঝখানে গুপ্তধন আছে।

২য় পার্ট পড়ুনঃ রোমাঞ্চকর গল্প দুই বন্ধু গল্প পার্ট ২


Check Also

ছোটদের গল্প রূপকথার গল্প | সাহসী বালক পার্ট ৩

প্রথম পার্ট: ছোটদের রূপকথার গল্প সাহসী বালক দ্বিতীয় পার্ট: ছোটদের কাল্পনিক গল্প সাহসী বালক পার্ট ২ তার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *