২০৯৯ সাল প্রায় শেষের পর্যায়ে। নতুন বছর উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে। মানবসভ্যতা বরন করে নেবে ২১০০ সালকে।
এতদিনে পৃথিবী অনেকটাই বদলে গেছে। মানুষ এখন শুধু বিশ্রাম নেয় আর নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কারে গবেষণা করে। সকল কাজের নিয়ন্ত্রন নিয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এখন জীবন অনেকটা সায়েন্স ফিকশন গল্পের মতো।
পৃথিবীর সকল দেশ এখন উন্নত। প্রত্যেক দেশের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। নাসার একদল গবেষক বৃহস্পতি গ্রহে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মানুষ বহু বছর আগেই মঙ্গল গ্রহে পৌছে গিয়েছে। তারা ১৪১ নম্বর পর্যন্ত পারমাণবিক মৌল আবিষ্কার করে ফেলেছে। বৃহস্পতি গ্রহের এই মিশনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ক্যাপ্টেন হাসান। তিনি এ বাকিদের সবকিছু বুঝিয়ে দিলেন। তাদের স্পেসশিপ বৃহস্পতির উদ্দেশ্য রওনা হল।
কয়েকদিন পর তারা বৃহস্পতিতে পৌছলেন। তারা প্রথমেই মি.করিমের সাথে দেখা করলেন। মি.করিম আরেক গবেষক দলের ক্যাপ্টেন। তিনি ক্যাপ্টেন হাসানকে কাজ বুঝিয়ে দিলেন।
তার মূল কাজ বৃহস্পতির মাটি নিয়ে গবেষণা করা। বৃহস্পতির বেশিরভাগ জায়গাতেই মানুষের যাওয়া হয়নি। শুধুমাত্র কিছু জায়গায় মানুষের পদচারণ হয়েছে।
বৃহস্পতির তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নিচে। তাই তারা বিশেষ ধরনের স্পেসসুট পরলেন। বৃহস্পতির যেটুকু জায়গায় মানুষ পৌঁছেছে, ততটুকু জায়গা সেফজোন করা হয়েছে। সেফজোনের বাইরে তাদের যাওয়া নিষেধ।
ক্যাপ্টেন হাসান তার সহকারী আলিকে নিয়ে বৃহস্পতিতে নামলেন। তারা গবেষণার জায়গার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। বৃহস্পতিতে তাদের হাঁটতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। যদিও তারা এ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য কয়েক বছরের প্রশিক্ষন নিয়ে এসেছিলেন।
তারা গবেষণার জায়গায় পৌছে গেলেন। জায়গাটা একেবারে সেফজোন সীমানার কাছাকাছি। সেফজোনের ভিতরে ল্যাম্পপোষ্টের কারণে আলো আছে। কিন্তু বাইরের দিকটা ঘুটঘুটে অন্ধকার।
হাসান মাটি থেকে কিছু স্যাম্পল তুলে নিলেন। মাটিতে বিশেষ কোনো উপাদান নেই। আলি মাটি খুড়া শুরু করল।
মাটির নিচে চকচকে কিছু একটা রয়েছে। ক্যাপ্টেন হাসান হাতে করে কিছুটা তুলে নিলেন। জিনিসটা মাটির সাথে মিশে আছে। খুবই অল্প, হাসান বললেন। আলি আগের মতই মাটি খুড়তে লাগল।
ক্যাপ্টেন হাসান সেফজোনের বাইরের দিকে অগ্রসর হলেন। কি যেন একটা তার দৃষ্টি আকর্ষণ করল। অন্ধকারের জন্য ভালোমতো দেখা যাচ্ছে না। জিনিসটা কেমন যেন নড়ছে। তার অবস্থান সেফজোনের বাইরে।
হাসান সেফজোন থেকে বের হয়ে গেলেন। তিনি উত্তেজনাবশত আলির কথাও ভুলে গেলেন। চারপাশ অন্ধকার হলেও, জিনিসটা চকচক করছে। তবুও ভালোমতো দেখা যাচ্ছে না। জিনিসটা কেমন জানি বদলে যাচ্ছে। ক্যাপ্টেন হাসান ঘাবড়ে গেলেন।
তিনি সেফজোন থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছেন। জিনিসটা নড়াচড়া করলেও একই অবস্থানে আছে। তিনি বস্তুটার অনেক কাছাকাছি চলে এসেছেন।
তিনি বুঝতে পারলেন জিনিসটা আসলে ধাতু। কিন্তু এমন ধাতু তিনি কখনো দেখেন নি। ধাতুটার গায়ে স্পর্শ করা মাত্রই ধাতুর আকার বদলে গেল। তিনি বিস্ময়ে ধাতুটার দিকে তাকিয়ে আছেন। তার মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছেনা।
তিনি কিছুক্ষন পর হুশ ফিরে পেলেন। তিনি ধাতুটার থেকে কিছুটা স্যাম্পল নিলেন। তিনি আবার সেফজোনের দিকে রওনা হলেন। কিন্তু পিছনে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সমস্ত কিছু অন্ধকারে ঢাকা।
তখন তার সাথে থাকা জিপিএসের কথা মনে পরল। কেউ যাতে হারিয়ে না যায়, সে জন্য সবাইকে একটা করে জিপিএস দেওয়া হয়েছিল। তিনি জিপিএসে সিগনাল পাঠালেন।
কিছুক্ষণ পর আলি এসে ক্যাপ্টেন হাসানকে নিয়ে গেল। মি. করিম তাকে অনেক বকা দিলেন। কিন্তু তার এই আবিষ্কারের জন্য সবাই খুশি। এতদিন তারা এই মৌলটাই আবিষ্কারের জন্য বৃহস্পতি গ্রহে গবেষণা করছিলেন।
তিনি নতুন মৌল আবিষ্কার করেছেন। এই মৌলটি অন্য সকল মৌল থেকে আলাদা। এটি যেকোনো আকার ধারণ করতে পারে। ক্যাপ্টেন হাসানের মিশন সফল হল। তিনি স্পেশশিপে করে পৃথিবীতে ফিরে এলেন।