এলিয়েন বন্ধু পার্ট ২ | বাংলা ছোটদের শিক্ষামুলক গল্প

প্রথম পার্ট পড়ুনঃ ছোটদের মজার গল্প এলিয়েন বন্ধু

ছোটদের গল্প হাসির


তুমি বৃষ্টিকে এতো ভয় পাও কেন? পানি আমাদের চরম শত্রু। আগুনে পুড়লে তোমাদের যেরকম কষ্ট হয়, পানিতে ভিজলে আমাদেরও সেরকম কষ্ট হয়।

বুঝলাম। বললো অনামিকা। যতদিন বৃষ্টি পড়বে, ততদিন তুমি আমার কাছে থেকো। তোমার কোনো অসুবিধা হবে না।

মাথা ডানে দুলিয়ে সুন্দর একটা হাসি দিয়ে এলিয়েন বললো, তোমাকে অনেক ধন্যবাদ বন্ধু।

অনামিকা এলিয়েনকে বাসার সবার সাথে পরিচয় করলো। এলিয়েনের কথা ভাইয়াকে ফোন করে বলল। এ কথা শুনে ভাইয়াকে ফোন আনন্দে একেবারে লাফিয়ে উঠল। ফোনে পাঁচ মিনিট কথা বললো এলিয়েনের সাথে ।

সন্ধ্যায় পড়তে বসলো সে। পাশে এলিয়েন বসে আছে।

এলিয়েন অবাক হয়ে বললো, তুমি কি পাগল হয়ে গেলে অনামিকা?’

কেন?

একা একা কী সব বক বক করছ?

মাথা দুলিয়ে হেসে উঠলো অনামিকা। বলল- বই পড়ছি রে, বই পড়ছি।

বই!

হুঁম, বই ৷

বই পড়ে কী হয়?

বই পড়ে মানুষ জ্ঞানী হয়।

তুমি তো এমনেতেই অনেক জ্ঞানী।

এলিয়েনের কথা শুনে খিলখিল করে হেসে উঠলো অনামিকা। আরে, এই জ্ঞানী হওয়া মানে শিক্ষিত হওয়া।

শিক্ষিত হলে কী হয়?

ডাক্তার, বিজ্ঞানী আরো অনেক কিছু।

আমিও তাহলে বই পড়ব।

ঠিক আছে, আমার সাথে সাথে পড়।

এলিয়েন অনামিকার সাথে সাথে বই পড়ে। মা নুডুলস রান্না করে নিয়ে আসেন। অনামিকার নুডুলস খুব প্রিয়। সে নুডুলস খায়, এলিয়েনকে খেতে বলে। এলিয়েন মাথা ডানে বামে সুন্দর করে দুলিয়ে, মোলায়েম হেসে বুঝায় সে এসব খায় না ।

এলিয়েনের এই হাসিটা খুব ভালো লাগে অনামিকার। বলে, এলিয়েন!

হুম।

তুমি এত সুন্দর করে হাসো কী করে?

তোমার হাসিটাও সুন্দর অনামিকা। বললো এলিয়েন। একেবারে মিষ্টি হাসি।

এলিয়েনের কথা শুনে আরো জোরে হেসে উঠে অনামিকা ।

অনামিকা আর এলিয়েন খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেল। এলিয়েন তাদের গ্রহের মজার মজার গল্প অনামিকাকে শোনায়। অনামিকা চোখ বড় বড় করে, মুখ হা করে তার গল্প শোনে। এসব ছোটদের কাল্পনিক গল্প শুনে সে খুব মজা পায়।

অনামিকা তাকে প্রত্যেহ স্কুলে নিয়ে যায়। বই পড়া শেখায়। এলিয়েনরা খুব ব্রিলিয়ান্ট। একবার কিছু শুনলেই তাদের মনে থেকে যায় ।

অনামিকার কাছে পড়া শিখে এখন অনেক কিছুই বুঝে এলিয়েন। এখন সে নিজে নিজেও পড়তে পারে।

সেদিন স্কুল থেকে এসে দুপুরে খেয়ে দেয়ে শুয়ে ঘুমাচ্ছিল অনামিকা আর এলিয়েন। কিন্তু এলিয়েনের চোখে কিছুতেই ঘুম আসছিল না। সে উঠে বসলো । তার দৃষ্টি পড়ল পড়ার টেবিলের দিকে । টেবিলের ওপর সুন্দর একটি বই জ্বল জ্বল করছে।

বইটা নিয়ে পড়তে লাগল সে । পড়তে পড়তে তার অশ্রু ঝরতে লাগল। অনামিকা ঘুম থেকে উঠে দেখলো এলিয়েন চুপচাপ বসে আছে। তার চোখের পাতা ভেজা, চোখ ফোলা ফোলা। তার ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল৷

এলিয়েন!

কী হয়েছে তোমার? কাঁদছ কেন?

মাকে খুব মনে পড়ছে আমার। আমি মায়ের কাছে যাবো।

অনামিকা দেখলো তার পাশে পড়ে আছে বইটি। অনামিকা বুঝতে পারল বইটা পড়ে তার মায়ের কথা মনে পড়েছে। ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সে বললো, তুমি চিন্তা করো না এলিয়েন, আজ আবহাওয়া বার্তায় বলেছে, আর দুদিন পরেই বৈরী আবহাওয়া কেটে যাবে। তারপর তুমি তোমার মায়ের কাছে ফেরত যেতে পারবে।

সত্যি! আনন্দে চোখ চকচক করে উঠলো এলিয়েনের ।

এলিয়েনের হাতে হাত রাখলো অনামিকা। মিষ্টি করে হাসলো। সে বলল- হুম, সত্যি।

দুই দিন পর বৈরী আবহাওয়া কেটে গেল। রোদ উঠলো। এলিয়েন বললো, এবার আমার নিজ গ্রহে ফিরে যেতে হবে। আমি মায়ের কাছে যাই। মা নিশ্চয় আমার জন্য খুব দুশ্চিন্তা করছে।

ঠিক আছে এলিয়েন। মিষ্টি হেসে বললো অনামিকা। আবার এসো।

নিশ্চয় আসবো, আর এসেই সর্বপ্রথম তোমার কাছে পড়া শিখবো।

হেসে উঠলো অনামিকা । তার সাথে সাথে এলিয়েনেও হাসলো।

তারপর ‘বাই’ বলে আকাশের দিকে উড়ে গেল এলিয়েন। অনামিকা তার উড়ে চলার দিকে তাকিয়ে রইল ।

Check Also

ছোটদের গল্প রূপকথার গল্প | সাহসী বালক পার্ট ৩

প্রথম পার্ট: ছোটদের রূপকথার গল্প সাহসী বালক দ্বিতীয় পার্ট: ছোটদের কাল্পনিক গল্প সাহসী বালক পার্ট ২ তার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *