চরম হাসির গল্প ক্লাস্রুমের ভূত পার্ট ২ | কমেডি হাসির গল্প

প্রথম পার্ট পড়ুনঃ ছোট হাসির গল্প ক্লাস্রুমের ভূত

প্রচন্ড হাসির গল্প


আলমঙ্গীর তখন বলল, তার মানে আপনি বোঝাতে চাইছেন ভূত বলে কিছু নেই? ভূত যে আছে সেটা আমি আজ প্রমাণ করব। বড় বড় বিজ্ঞানীর নামের পাশে আরেকটা নাম প্রতিষ্ঠিত করব। সেটা হলো ‘বিজ্ঞানী আলমগীর কবীর’। সবাই হো হো করে হেসে দিল।

ক্লাসের এক রোল নুসাইবা বলল, তাহলে দেখাও তোমার ভূত। আমরা দেখি সেই মহান জিনিস।

আলমঙ্গীর বলল, ভূতদের মহান বলতে হয় না। ওরা এমনিতে মহান। শুধু মহান নয়, একেবারে গ্রেট । এখন তোমাদের সামনে কি ভূতটা বের করতে পারি?

সবাই ভীষণ অপেক্ষা করছে। একু কেউ তার কথা শুনে হেসেও দিলো। না জানি আলঙ্গীর কী বের করে। এদিকে খলিল স্যার মনে মনে ভাবছেন ছেলেটার চিকিৎসা হওয়া দরকার । নইলে দিন দিন আরও খারাপ অবস্থা হবে। আমি একটা ব্যর্থ শিক্ষক । ছাত্রদের ভূত বিষয়টা পর্যন্ত বোঝাতে পারলাম না ।

আলমঙ্গীর তার টিফিন বক্সটা খুলল । তারপর সবাইকে বলল, ভূত তো বের হতে চায় না । ও ভারি লাজুক । এখন কী করি! আচ্ছা, তোমরা কিছু চাও যেটা ভূতটা এনে দেবে।

ফার্স্ট বেঞ্চে বসা কয়েকজন ছাত্র হো হো করে হেসে দিল। তারা বলল, সন্দেশ আনতে বলো। আমরা সন্দেশ খাব।

কয়েকটা মেয়ে বলল, আমরা আইসক্রিম খাব।

জগলু উচ্চ স্বরে বলল, আমি মুরগির রোস্ট খাব।

শেষ বেঞ্চে বসা মেয়েরা বলল যে তারা কাচ্চি বিরিয়ানি খাবে।

আলঙ্গীর পড়ে গেল ঝামেলায়। কোনটা রেখে কোনটা আনবে। সে বলল, ভূতেরা এসব খায় না। তাই তারা এসব খাবারও আনতে পারবে না। ভূতেরা খায় মাছ, বন জঙ্গলের ফলমূল ইত্যাদি। মাঝে মধ্যে আলো খায় । চাঁদের আলো তাদের খুব পছন্দ। এখন তোমরা তো এসব খাও না। তাই খাওয়ার বিষয়টা ক্যানসেল ।

হঠাৎ খলিল স্যার বললেন, নামআমার খলিল। আমি দলিল ছাড়া কথা বলি না (এটা স্যারের কমন ডায়ালগ)।

আলঙ্গীর একটা দুষ্ট ছেলে। সে তোদের বোকা বানিয়েছে। তোরা হলি সবাই গাধা।

আলঙ্গীর বিদ্রোহ করে বলল, আমি এখনই ভূত দেখাচ্ছি সবাইকে । এই কুটুস বের হয়ে আয়, ভয় কিসের। ও আরেকটা কথা বলা হয়নি। আমার ভূতের নাম কুটুস। নামটা ওর মা রেখেছে, সুন্দর না?

নাহ, ও আসলে ভয় পাচ্ছে। এক কাজ করি, আমি অদ্ভুত কিছু করি যেটা দেখলে সবার বিশ্বাস হবে আমার কাছে ভূত আছে। এই কুট্টুস, আমাকে এই ক্লাসের বাইরে নিয়ে যা। তারপর একশো হাত ওপরে তুল। দেখিস ফেলে দিস না আবার।

সত্যি সত্যি ক্লাস থেকে উড়ে উড়ে চলে গেল আলঙ্গীর । তারপর মাটি থেকে ঠিক একশো হাত ওপরে ভেসে থাকল শূন্যে। খলিল স্যার অজ্ঞান হয়ে গেলেন। কয়েকটা মেয়ে উনাকে ধরল। আমাদের চোখে ঘুটঘুটে অন্ধকার। সবাই বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে, অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা।

স্কুল মাঠে এ দৃশ্য দেখার জন্য সব ছেলেমেয়ে হাজির হলো। কারও মুখে কথা নেই। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্ররা বলল, নিউটনের সূত্রটা মনে হয় নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা ভাসছি না কেন? স্যারেরা সবাই হায় হায় করছেন। এ কী করে সম্ভব?

একশো হাত ওপর থেকে আলঙ্গীর বলল, আমার ক্লাসের যারা আছ, তারা ক্লাসে গিয়ে দেখ তোমরা যে যা খেতে চেয়েছিলে সবই সাজানো আছে। আমি মনে করেছিলাম এসব খাবার কুটুস আনতে পারবে না। এখন দেখছি তা না ও সবকিছুই আনতে পারে। ও ভীষণ লজ্জা পাচ্ছে। তোমরা সবাই ক্লাসে চলে যাও।

আমরা যারা অষ্টম শ্রেণির তারা সবাই ক্লাসে গিয়ে দেখলাম সন্দেশ, আইসক্রিম, মুরগির রোস্ট, কাচ্চি বিরিয়ানি খুব সুন্দর করে সাজানো। যে যা চেয়েছিল, তা সবই আছে। আমরা জীবনে আগে এত অবাক কখনোই হইনি। শুধু আমি না স্কুলের সবাই অবাক। আলমঙ্গীর ভূত পেল কোথায়? এত বড় ঘটনা ঘটাল কেমনে সে? ভাবতেই গায়ে কাঁটা লাগে ।

Check Also

শিক্ষনীয় হাসির গল্প দুলাইভাইর ইউটিউবিং | কমেডি হাসির গল্প

দুলাভাই রসিক মানুষ। সংসারি নয়। আমার মতে তিনি অ্যাকসিডেন্টাল বিয়ের শিকার। যখন যেটা মাথায় আসে, একচোট এক্সপেরিমেন্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *