শিক্ষনীয় হাসির গল্প দুলাইভাইর ইউটিউবিং | কমেডি হাসির গল্প


শিক্ষনীয় হাসির গল্প


দুলাভাই রসিক মানুষ। সংসারি নয়। আমার মতে তিনি অ্যাকসিডেন্টাল বিয়ের শিকার। যখন যেটা মাথায় আসে, একচোট এক্সপেরিমেন্ট চালান।

সেদিন বললেন, শালাবাবু, চল ভিডিও বানাই। ইউটিউব ভিডিও। লাখ লাখ টাকা কামাব।


আমি কল্পনায় তর্ক চালিয়ে গেলাম কিছুক্ষণ। বুঝলাম, জেতা যাবে না। অগত্যা উঠে বসলাম। বললাম, চলেন। 

ঘটনাপ্রবাহে আমি এখন ক্যামেরাম্যান। এক্সপেরিমেন্টের টাইটেল, আমাদের মানসিকতা দিন দিন কোনদিকে যাচ্ছে?

ইউটিউবের জন্য এমন টাইটেল নাকি কাজে আসে। প্ল্যানটা হলো দুলাভাই কোনো এক ফুটপাথের একপাশে টুল নিয়ে বসবেন। তার মুখে বাঘের মুখোশ থাকবে (কেউ যাতে না চেনে)। সামনে প্ল্যাকার্ডে লেখা থাকবে ‘আমাকে যত খুশি বিরক্ত করুন, কিচ্ছু বলব না।’ আমার কাজ হলো গোপনে ভিডিও করা।

দুই মিনিট কিছুই ঘটল না। লোকজন প্ল্যাকার্ড দেখে ভুরু কুঁচকে দাঁড়াচ্ছে আবার চলে যাচ্ছে। আমি যথারীতি ধৈর্য হারিয়ে মোবাইলটা পকেটে ঢুকিয়ে ফেললাম। পরে বলব, রেকর্ড বাটন চাপতে ভুলে গেছি।


মোবাইল পকেটে রাখতেই ঘটনা ঘটতে লাগল। এক টোকাই মতোন ছেলে ডাস্টবিন থেকে আবর্জনা নিয়ে দুলাভাইর গায়ে ঢেলে দিল। নতুন শার্ট ময়লায় ভরে গেছে। পানের পিক ফেলে পেটমোটা লুঙ্গিপরা এক লোক নির্বিকার ভঙ্গিতে দুলাভাইর শার্টের কলারটা টেনে মুখ মুছে নিল।

আমি হা করে কাণ্ড দেখছি। লোকজন বিরক্ত করার ব্যাপারে এত সৃজনশীল। সবচেয়ে বেশি যেটা ঘটল সেটা হলো গুঁতো। সরাসরি গুঁতো নয়, পাশ থেকে একটা কিছু কুড়িয়ে নিয়ে তারপর গুঁতো। প্রমাণিত হলো মানুষ গুঁতো দিতে ভালোবাসে।


আধাঘণ্টা কেটে গেল। চলে যাব কিনা ভাবছি। এক নারীর বজ্রকণ্ঠ শুনে থমকে দাঁড়ালাম। হাতের ব্যাগটা দিয়ে দুলাভাইকে বাড়ি দিলেন গোটাকতক।

এরপর শাসিয়ে চলেছেন ক্রমাগত। দুলাভাইর মুখে টু শব্দ নেই। কৌতূহলী দর্শকের সারিতে আমিও ঢুকে পড়লাম।

আশপাশে অনেকে আবার ক্যামেরা তুলে ভিডিও করছে। মহিলা বারবার কয়েকটা কথাই বলছেন, আজ শুক্রবার সেটা মনে আছে? ভং ধরে রাস্তায় পড়ে থেকে কী বোঝাতে চাও। তুমি সন্ন্যাসী হইবা? সন্ন্যাসী হওয়ার আগে আগামী তিন মাসের বাজারের টাকা রেখে যাবা।

ইয়ে মানে আপা আপনার ভুল…। মিনমিন করে বললাম।

চুপ করেন মিয়া! রাস্তায় ঝামেলা বাঁধলে সবসময় মেয়েদের দোষ ধরতে আসেন।


দর্শকসারিতে প্রবল হাসির তোড়। আমি আর শব্দ করলাম না। ভাবলাম দুলাভাইর তো মহিলার গলা শুনে বুঝতে পারার কথা।

শোনো! আজই শেষ।

রোজ রোজ এমন খেলা কেন খেলতেছ, সেটা বুঝি! তোমারে ডিভোর্স দিচ্ছি না আমি সহজে। বুঝলা! তোমার লাইফ ত্যানা ত্যানা কইরা ছাড়ব!

দুলাভাই তোতলাতে তোতলাতে বললেন, আমার যা মন চায় করব। আপনার খাই না পরি! আমার মন চাইলে বত্রিশ দিন এখানে বসে থাকব। চৌত্রিশ দিন বাজার করব না!

এরপর কানে শুধু একটা কথাই এলো…। ইয়ে মানে, আমার স্বামীও আপনার মতো এই শার্ট পরেন কিনা, তাই আপনাকে উনি ভেবে বকবক করলা শুধু।

এরকম আরো ছোট হাসির গল্প ও চরম হাসির গল্প পেতে আমাদের নতুন হাসির গল্প ক্যাটাগরি ব্রাউজ করুন।


Check Also

আধুনিক হাসির গল্প বেনারসি শাড়ি | দমফাটা হাসির গল্প

সারা দিন অফিস শেষে ঘরে ঢুকলেন মফিজ সাহেব। স্ত্রী ফুলবানু সেজেগুজে তার জন্যই বসে ছিলেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *