দুই বন্ধু গল্প পার্ট ২ | সেরা বন্ধুত্বের গল্প



প্রথম পার্ট পড়ুন: দুই বন্ধুর শিক্ষনীয় গল্প

প্রকৃত বন্ধুর গল্প


ফিহাদ তখন তাকে জিজ্ঞেস করল- তাহলে তুমি গুপ্তধন নেওনি কেন?

সে বলল- আমি তো ছোটো খাটো চোর ছিলাম। একবার এক বাসায় এই গুপ্তধনের নকশা পাই। গুপ্তধন পাওয়ার আগেই পুলিশ আমাকে ধরে ফেলে।


তাহলে তোমাকে এত বছরের জেল দিল কেন?

থাক, সে কথা এখন নাই বললাম।

কারাগারে ফিহাদের ভাল ব্যবহারের জন্য তাকে অর্ধেক সাজা ভোগ করেই মুক্তি দেওয়া হল। ফিহাদের এক জন ছেলে হয়ছিল। তার নাম সাফওয়ান রাখা হয়েছিল।

ফিহাদের আরেকজন বন্ধু হয়। তার নাম শাকীল। ফিহাদ তার সাথে শাকীলকে নিয়ে নি। কারন তার গুপ্তধনের ভাগ যদি কমে যায়।

ফিহাদ রওনা হয় গুপ্ত ধনের উদ্দেশে। কিছুদিন পর সিলেটে পৌঁছে গেছে ফিহাদ। ফিহাদ একটি আবাসিক হোটেলে থাকল। রাতে সে সেই বাড়িতে গেল। সেই নকশা দিয়ে সেই গুপ্তধনের জায়গা খুজে বের করল।

রাতের অন্ধকারে ফিহাদ মাটি গর্ত করল। ফিহাদ দেখে সেখানে একটি অনেক পুরাতন বক্স। ফিহাদ বক্সটি খুলল। অন্ধকারে সে কিছু দেখতে পাচ্ছে না।

তার পকেট থেকে তার মোবাইল বের করল। মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে দেখে তিনটি হিরা ও পাঁচটি  স্বর্ণের নেকলেস। সে সব গুপ্তধন নিয়ে সেখান থেকে চলে এল।

পরেরদিন সকালে সে বাড়ীর উদ্দেশ্যে লঞ্চে রওনা হয়। ফিহাদের ভাগ্য এতই খারাপ যে মেঘনা নদীতে লঞ্চটি ডুবে যায়।। ফিহাদ সাতার দিয়ে নদীর পারে পৌছে গেল। গুপ্তধনের বক্স তার কাছেই আছে। তারপর কে যেন ফিহাদের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করল। সঙ্গে সঙ্গে সে আঘাত অজ্ঞান হয়ে পরল।

সেই লোকটি দেখল একটি নেকলেস পরে রইছে মাটিতে। সে তাই নিয়েই চলে গেল।

ফিহাদ উঠে দেখল তার বক্সটি নিচে পরে রয়েছে। ফিহাদ খুলে দেখে একটি নেকলেস নেই । সে আশেপাশে অনেক খুঁজার পরও নেকলেসটি খুঁজে পেল না। সে ভাবল লোকটি হয়তো ছিনতাইকারী।

সে এই ভেবে খুশি হল যে লোকটি আর কিছু নিল না। ফিহাদ্দ অন্যান্য গুপ্তধন গুলো আরেক জায়গায় লুকিয়ে রেখেছিল। তাই লোকটি হয়তো নিতে পারেনি।

ফিহাদ আরেকটি লঞ্চে চরে বাড়ীতে পৌছে গেল। ফিহাদ গুপ্তধন বিক্রি করে ধনী হয়ে গেল। সে চট্টগ্রাম বন্দরে ব্যবসা শুরু করল। সে দোকান বানিয়ে সেগুলো ভাড়া দিল। ফিহাদের আরেক মেয়ে হয়। এভাবে তাদের সুখে দিন কাটতে লাগল।


জেলখানায় যে লোকটা ফিহাদকে গুপ্তধনের কথা বলেছিল, তার একটা শর্ত ছিল। ফিহাদকে তার স্ত্রী ও সন্তান্দের নিয়মিত থাকা খাওয়ার টাকা পাঠাতে হবে। ফিহাদ তার কথা রাখল। সে নিয়মিত তাদের থাকা খাওয়ার টাকা দেয়।

তবে ফিহাদের জীবনে এই সুখ বেশি দিন স্থায়ী হল না। একদিন ফিহাদ তার পরিবারসহ তার শ্বশুরবাড়ি যাবে। ফিহাদের দুই সন্তান সাফওয়ান ও নিলা এদিক সেদিক তাকিয়ে হাঁটতেও আছে।

তারা আগে কোনোদিন তারা লঞ্চঘাট দেখেনি। তাই তারা অবাক দৃষ্টিতে লঞ্চগুলোর দিকে তাকিয়ে ছিল। তারা তাদের বাবা ফিহাদের পিছনে পিছনে হাঁটছিল।

কিছুক্ষন পর তারা দেখল তাদের মা-বাবা তাদের সামনে নেই। একটু আগেই তো তারা ছিল। ফিহাদের অগোচরে তারা হারিয়ে গেল।

ফিহাদও কতক্ষন পর পিছে দেখে বুঝতে পারে তারা নেই। সে তাদের খুঁজল। কিন্তু এত ভীড়ের মধ্যে তাদের খুঁজে পেল না।


সাফওয়ান ও নিলা দেখতে নিল পায় পাশে একটি নদী। সে নদীর অপর অনেক লঞ্চ ও ট্রলার। তারা একটি ট্রলারে উঠল। সে ট্রলারটি চট্রগ্রামগামী। ট্রলারটি লঞ্চঘাট ছাড়ল। সকালে সাফওয়ান নিলাকে ডেকে বলে আমরা চট্টগ্রাম পৌছে গেছি।

তারা দুইজন ট্রলার নামছে। সাফওয়ান নিলাকে বলল- আমাদের কাছে তো কোনো টিকেট নেই। সাফওয়ান সাঁতার জানত।

সাফওয়ান নিলাকে বলল-তুই ভিড়ের মধ্যে মিশে ওই দোকান টার কাছে যা। আমি আসতেছি।

নিলা ভিড়ের মধ্যে মিশে ট্রলার থেকে নেমে সেই দোকান টার কাছে চলে গেল। সাফওয়ান নদীতে লাফ দিয়ে সাতাঁর কাটতে লাগল। সে নদীর পারে উঠে গেল। সে সেই দোকানটারটির কাছে গেল। সে দেখল নিলা সেখানে নেই।



৩য় পার্ট পড়ুনঃ বন্ধুত্বের কষ্টের গল্প দুই বন্ধুর পার্ট ৩

Check Also

ছোটদের গল্প রূপকথার গল্প | সাহসী বালক পার্ট ৩

প্রথম পার্ট: ছোটদের রূপকথার গল্প সাহসী বালক দ্বিতীয় পার্ট: ছোটদের কাল্পনিক গল্প সাহসী বালক পার্ট ২ তার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *